Jibananada Das || Bangla Kobita || সেদিন এ-ধরণীর
সেদিন এ-ধরণীর
সেদিন এ-ধরণীর
সবুজ দ্বীপের ছায়া—উতরোল তরঙ্গের ভিড়
মোর চোখে জেগে-জেগে ধীরে-ধীরে হ’লো অপহত
কুয়াশায় ঝ’রে পড়া আতসের মতো।
দিকে-দিকে ডুবে গেল কোলাহল,
সহসা উজানজলে ভাটা গেল ভাসি,
অতিদূর আকাশের মুখখানা আসি
বুকে মোর তুলে গেল যেন হাহাকার।
সবুজ দ্বীপের ছায়া—উতরোল তরঙ্গের ভিড়
মোর চোখে জেগে-জেগে ধীরে-ধীরে হ’লো অপহত
কুয়াশায় ঝ’রে পড়া আতসের মতো।
দিকে-দিকে ডুবে গেল কোলাহল,
সহসা উজানজলে ভাটা গেল ভাসি,
অতিদূর আকাশের মুখখানা আসি
বুকে মোর তুলে গেল যেন হাহাকার।
সেইদিন মোর অভিসার
মৃত্তিকার শূন্য পেয়ালার ব্যথা একাকারে ভেঙে
বকের পাখার মতো শাদা লঘু মেঘে
ভেসেছিলো আতুর উদাসী;
বনের ছায়ার নিচে ভাসে কার ভিজে চোখ
কাঁদে কার বাঁরোয়ার বাঁশি
সেদিন শুনিনি তাহা;
ক্ষুধাতুর দুটি আঁখি তুলে
অতিদূর তারকার কামনায় আঁখি মোর দিয়েছিনু খুলে।
আমার এ শিরা-উপশিরা
চকিতে ছিঁড়িয়া গেল ধরণীর নাড়ীর বন্ধন,
শুনেছিনু কান পেতে জননীর স্থবির ক্ৰন্দন—
মোর তরে পিছু ডাক মাটি-মা—তোমার;
ডেকেছিলো ভিজে ঘাস—হেমন্তের হিম মাস—জোনাকির ঝাড়,
আমারে ডাকিয়াছিলো আলেয়ার লাল মাঠ—শ্মশানের খেয়াঘাট আসি,
কঙ্কালের রাশি,
দাউ-দাউ চিতা,
কতো পূর্ব জাতকের পিতামহ পিতা,
সর্বনাশ ব্যসন বাসনা,
কতো মৃত গোক্ষুরার ফণা,
কতো তিথি—কতো যে অতিথি—
কতো শত যোনিচক্রস্মৃতি
করেছিলো উতলা আমারে।
আধো আলো—আধেক আঁধারে
মোর সাথে মোর পিছে এলো তা’রা ছুটে,
মাটির বাটের চুমো শিহরি উঠিল মোর ঠোঁটে, রোমপুটে;
ধুধু মাঠ—ধানখেত—কাশফুল—বুনো হাঁস—বালুকার চর
বকের ছানার মতো যেন মোর বুকের উপর
এলোমেলো ডানা মেলে মোর সাথে চলিল নাচিয়া;
মৃত্তিকার শূন্য পেয়ালার ব্যথা একাকারে ভেঙে
বকের পাখার মতো শাদা লঘু মেঘে
ভেসেছিলো আতুর উদাসী;
বনের ছায়ার নিচে ভাসে কার ভিজে চোখ
কাঁদে কার বাঁরোয়ার বাঁশি
সেদিন শুনিনি তাহা;
ক্ষুধাতুর দুটি আঁখি তুলে
অতিদূর তারকার কামনায় আঁখি মোর দিয়েছিনু খুলে।
আমার এ শিরা-উপশিরা
চকিতে ছিঁড়িয়া গেল ধরণীর নাড়ীর বন্ধন,
শুনেছিনু কান পেতে জননীর স্থবির ক্ৰন্দন—
মোর তরে পিছু ডাক মাটি-মা—তোমার;
ডেকেছিলো ভিজে ঘাস—হেমন্তের হিম মাস—জোনাকির ঝাড়,
আমারে ডাকিয়াছিলো আলেয়ার লাল মাঠ—শ্মশানের খেয়াঘাট আসি,
কঙ্কালের রাশি,
দাউ-দাউ চিতা,
কতো পূর্ব জাতকের পিতামহ পিতা,
সর্বনাশ ব্যসন বাসনা,
কতো মৃত গোক্ষুরার ফণা,
কতো তিথি—কতো যে অতিথি—
কতো শত যোনিচক্রস্মৃতি
করেছিলো উতলা আমারে।
আধো আলো—আধেক আঁধারে
মোর সাথে মোর পিছে এলো তা’রা ছুটে,
মাটির বাটের চুমো শিহরি উঠিল মোর ঠোঁটে, রোমপুটে;
ধুধু মাঠ—ধানখেত—কাশফুল—বুনো হাঁস—বালুকার চর
বকের ছানার মতো যেন মোর বুকের উপর
এলোমেলো ডানা মেলে মোর সাথে চলিল নাচিয়া;
মাঝপথে থেমে গেল তা'রা সব;
শকুনের মতো শূন্যে পাখা বিথারিয়া
দূরে—দূরে—আরো দূরে—আরো দূরে চলিলাম উড়ে,
নিঃসহায় মানুষের শিশু একা—অনন্তের শুক্ল অন্তঃপুরে
অসীমের আঁচলের তলে
স্ফীত সমুদ্রের মতো আনন্দের আর্ত কোলাহলে
উঠিলাম উথলিয়া দুরন্ত সৈকতে—
দূর ছায়াপথে।
পৃথিবীর প্রেতচোখ বুঝি
সহসা উঠিল ভাসি তারকাদর্পণে মোর অপহৃত আননের প্রতিবিম্ব খুঁজি;
ভ্রূণভ্রষ্ট সন্তানের তরে
মাটি-মা ছুটিয়া এলো বুকফাটা মিনতির ভরে;
সঙ্গে নিয়ে বোবা শিশু—বৃদ্ধ মৃত পিতা,
সূতিকা-আলয় আর শ্মশানের চিতা,
মোর পাশে দাঁড়ালো সে গর্ভিণীর ক্ষোভে;
মোর দুটি শিশু আঁখি-তারকার লোভে
কাঁদিয়া উঠিল তার পীনস্তন—জননীর প্রাণ;
জরায়ুর ডিম্বে তার জন্মিয়াছে যে ঈপ্সিত বাঞ্ছিত সন্তান
তার তরে কালে-কালে পেতেছে সে শৈবালবিছানা শালতমালের ছায়া,
এনেছে সে নব-নব ঋতুরাগ—পউষনিশির শেষে ফাগুনের ফাগুয়ার মায়া;
তার তরে বৈতরণীতীরে সে যে ঢালিয়াছে গঙ্গার গাগরী,
মৃত্যুর অঙ্গার মথি স্তন তার ভিজে রসে উঠিয়াছে ভরি,
উঠিয়াছে দূর্বাধানে শোভি,
মানবের তরে সে যে এনেছে মানবী;
মশলাদরাজ এই মাটিটার ঝাঁঝ যে রে—
কেন তবে দু-দণ্ডের অশ্রু অমানিশা
দূর আকাশের তরে বুকে তোর তুলে যায় নেশাখোর মক্ষিকার তৃষা!
নয়ন মুদিনু ধীরে—শেষ আলো নিভে গেল পলাতক নীলিমার পারে,
সদ্য-প্রসূতির মতো অন্ধকার বসুন্ধরা আবরি আমারে।
শকুনের মতো শূন্যে পাখা বিথারিয়া
দূরে—দূরে—আরো দূরে—আরো দূরে চলিলাম উড়ে,
নিঃসহায় মানুষের শিশু একা—অনন্তের শুক্ল অন্তঃপুরে
অসীমের আঁচলের তলে
স্ফীত সমুদ্রের মতো আনন্দের আর্ত কোলাহলে
উঠিলাম উথলিয়া দুরন্ত সৈকতে—
দূর ছায়াপথে।
পৃথিবীর প্রেতচোখ বুঝি
সহসা উঠিল ভাসি তারকাদর্পণে মোর অপহৃত আননের প্রতিবিম্ব খুঁজি;
ভ্রূণভ্রষ্ট সন্তানের তরে
মাটি-মা ছুটিয়া এলো বুকফাটা মিনতির ভরে;
সঙ্গে নিয়ে বোবা শিশু—বৃদ্ধ মৃত পিতা,
সূতিকা-আলয় আর শ্মশানের চিতা,
মোর পাশে দাঁড়ালো সে গর্ভিণীর ক্ষোভে;
মোর দুটি শিশু আঁখি-তারকার লোভে
কাঁদিয়া উঠিল তার পীনস্তন—জননীর প্রাণ;
জরায়ুর ডিম্বে তার জন্মিয়াছে যে ঈপ্সিত বাঞ্ছিত সন্তান
তার তরে কালে-কালে পেতেছে সে শৈবালবিছানা শালতমালের ছায়া,
এনেছে সে নব-নব ঋতুরাগ—পউষনিশির শেষে ফাগুনের ফাগুয়ার মায়া;
তার তরে বৈতরণীতীরে সে যে ঢালিয়াছে গঙ্গার গাগরী,
মৃত্যুর অঙ্গার মথি স্তন তার ভিজে রসে উঠিয়াছে ভরি,
উঠিয়াছে দূর্বাধানে শোভি,
মানবের তরে সে যে এনেছে মানবী;
মশলাদরাজ এই মাটিটার ঝাঁঝ যে রে—
কেন তবে দু-দণ্ডের অশ্রু অমানিশা
দূর আকাশের তরে বুকে তোর তুলে যায় নেশাখোর মক্ষিকার তৃষা!
নয়ন মুদিনু ধীরে—শেষ আলো নিভে গেল পলাতক নীলিমার পারে,
সদ্য-প্রসূতির মতো অন্ধকার বসুন্ধরা আবরি আমারে।
(ঝরা পালক থেকে সংগ্রহীত)
⇚Previous ঝরা পালক Next⇛
________________________________________________________
- Feel the taste of bangla kobita. various poem for Rabindranath Tagore,Jibanananda das and others bangla romantic kobita lines & love shayari bengali.If you like my work please makes a comment in the comment section and feels free to give your valuable suggestions to improve the blog content. Also, you can post your own Bangla kobita, Bangla and Hindi Shayari. Choto golpo,valobasar kobita, some romantic lines in the comment section.
- For update related to quotes of various sections clicks on Quotes. Loves to read Bengali poem? Visit Bangla kobita.